১৫ জানু, ২০১২

মনের অসীম বৈশিষ্ট্যের জন্যই মানুষ সৃষ্টির সেরা!


মানুষের মন সবচেয়ে বেশি বৈচিত্রপ্রবন! এই বৈচিত্রতারও কোন শেষ নেই! মনের গভীরতা, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, রূপ, রং, গঠন কোনটারই কোন সুনির্দিষ্টতা নেই যা দিয়ে তাকে সংজ্ঞায়িত করা যায়সূর্য যত বড়ই হউক তার বৃহৎতা, তার জ্বালানীশক্তি, আলোক ও তাপ ক্ষমতা ইত্যাদি সম্পর্কে ভালকরে জানলে মনের মধ্যে সূর্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা জন্ম নিতে পারেযত বৃহৎ, যত দহন ক্ষমতা, যত শক্তিই সূর্যের থাক; মনে তার ছবি কল্পনা করতে সমস্যা হয়নাতাই বলতে হয় মনের ধারন ক্ষমতা বিশালমহাবিশ্বের সবকিছুর স্থান সংকুলান হওয়ার পরও মহাবিশ্বের অসীম স্রষ্টা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনকে এই মনের মধ্যেই শুধু স্থান দেয়া যায়এ থেকে বুঝা যায় মনের ধারন ক্ষমতা শুধু বিশাল নয়, অসীম!

মানুষ যেহেতু আল্লাহ্ তায়ালার প্রতিনিধি তাই সে মন দিয়েই শুধু অসীম আল্লাহ্ তায়ালার প্রতিনিধিত্ব করে! এই মন তাই সেই অসীমকে জানতে চায়তার মধ্যে প্রশ্নোদয় হয়- তুমি কে? মানুষের মত মন দিয়ে আর কাউকেই সৃষ্টি করা হয়নিতাই মানুষের মাঝেই আল্লাহ্ তায়ালার সর্বোত্তম বিকাশ সম্ভবমানুষের সীমাবদ্ধ দেহের মধ্যে যে আত্মা তাহাও অসীমতাইত তাকে সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে ধরা যায়নামনেরও কোন সীমা-পরিসীমা করা যায়নাতাহলে দেখা যাচ্ছে মনও অসীম, আত্মাও অসীমকোন বৈশিষ্ট্যের জন্য মানুষ সৃষ্টির সেরা- আত্মার না মনের?

উত্তরে বলবো, যেহেতু আত্মা মানুষ সহ সকল প্রাণীতেই আছে, কিন্তু মানুষের মত মন নেই সকলের, তাই বলা যায় মনের অসীম বৈশিষ্ট্যের জন্যই মানুষ সৃষ্টির সেরামনের এই বৈশিষ্ট্যতার জন্যই মানুষের জীবন যাপন প্রণালী অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে ভিন্নমানুষের মাঝে আল্লাহ্ তায়ালা বিকাশলাভ করতে চেয়েছেন বলেই মানুষকে এইরূপ মন দিয়ে সৃষ্টি করেছেনসোবহানাল্লাহ্! যে মানুষের মধ্যে আল্লাহ্ তায়ালার এই উদ্দেশ্য যথার্তরূপে সফল হয়েছে সেই সফল মানুষ

২৩ ডিসে, ২০১১

তাকদীর বা ভাগ্য কি?


তাকদীরের রহস্য সাধারনতঃ দূর্বোধ্য, তাই বিষয়ে জানার কৌতুহল অনেকেরই থাকতে পারে আমি বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করছি যা কিছু আল্লাহ্ কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত তাহাই তাকদীর তাই আল্লাহ্ পাকের সমগ্র সৃষ্টিই তাকদীরের বিধান অনুযায়ী হয়েছে এই তাকদীরের বিধান আল্লাহ্ পাকের জারীকৃত দুইটি সুস্পষ্ট বিধান দ্বারা সীমিত তার একটি হল আল্লাহ্ পাকের এখতিয়ারাধীন সৃষ্টিগত আইন যাকে ইসলামের পরিভাষায় তাকবিনী আইন বলে তাকবিনী বলিতে সৃষ্টিগত কাজের ধারাবাহিক নিয়ম কানুনকে বুঝায় যেমন "কুন" বলার সঙ্গে সঙ্গে "ফাইয়াকুন" হয়েছে অর্থাৎ মহাবিশ্ব সৃষ্টি হইয়াছে এবং সৃষ্টির পর তাহা নিখুঁতভাবে কেয়ামত পর্যন্ত চলিতে থাকিবে

অপরটি হল মানুষের এখতিয়ারাধীন বাস্তব জীবন যাপনের জন্য কাজ যাকে ইসলামের পরিভাষায় তাশরিয়া আইন বলে এইটি মানুষের ইচ্ছার স্বাতন্ত্র্য কর্মের স্বাধীনতার মধ্যে সীমিত তাকদীরের বিধান অনুযায়ী তাশরিয়া কাজটি করিলে এই ফল দাঁড়াইবে, আর না করিলে এই ফল দাঁড়াইবে এইরূপ এক্ষেত্রে যে বিজ্ঞোচিত ব্যবস্থায় কাজটি করা আর না করার ফলাফল ঝুলন্ত বা অচূড়ান্ত অবস্থায় তাকদীরে লিপিবদ্ধ থাকে সেই ব্যবস্থাকে তাকদীরে মুয়াল্লাক বলে

আবার তাকদীরে মুয়াল্লাকে রক্ষিত কাজটির ফলাফল আদৌ ঘটিবে কি ঘটিবেনা তাহা একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া পূর্ব হইতে কেউই জানেননা এমনকি ফেরেশতারাও তাহা জানেননা এই চূড়ান্ত ব্যবস্থাকে তাকদীরে মুবরাম বলে তবে তাকদীর আল্লাহ্ কর্তৃক একবার মুবরাম বা চূড়ান্ত হলে তাহা কখনও রদবদল হয়না তাকদীরে মুয়াল্লাক এবং তাকদীরে মুবরাম উভয়ের মধ্যকার সময়ের পরিসরটিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কতিপয় ভাগ্য বিপর্যয় উত্তরণের সুযোগ রহিয়াছে আর কতিপয় ভাগ্য বিপর্যয় যাহা আল্লাহ্ কর্তৃক মুবরাম বা চূড়ান্ত তাহার উত্তরণ সম্ভব নয়

যে কারনে দেখাযায়, মানুষ চেষ্টার দ্বারা অনেক সময় সফল হয়, আবার কখনো আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় যেহেতু সৃষ্টিজগতের কেউই তাকদীরে মুবরাম সম্পর্কে জানিনা সেহেতু সকল ব্যাপারে সচেষ্ট থাকাই উচিত চরম চেষ্টা সাধনা নামে অভিহিত তদবীরই একমাত্র প্রক্রিয়া যাহা ভাগ্য বিড়ম্বিতকে সৌভাগ্যে উত্তরণ ঘটাইতে সক্ষম

সম্পর্কে হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁহার এক হাদীসে বলেছেন, "তদবীরই তাকদীরের নিয়ামক" অন্যত্র বলেছেন, "চেষ্টা সাধনা কখনও বৃথা যায়না" পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহ্ পাক ঘোষনা করেন, "আল্লাহ্ কোন জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেননা যতক্ষণ না সেই জাতি নিজেই নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করে" পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহ্ পাক আরও বলেন, "মানুষ যাহা চেষ্টা করে তাহার অতিরিক্ত কিছুই তাহার প্রাপ্য নয়"

উপরোল্লিখিত আলোচনার আলোকে বলাযায়, বস্তুতঃ কর্মের প্রভাব অনস্বীকার্য কথা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল প্রাণীর ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য সাবধানতা, ধৈর্য্য, সংযম, নিয়মানুবর্তিতা, আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা, কর্মস্পৃহা, প্রচেষ্টা, সাহায্য গ্রহন, চিকিৎসা ইত্যাদিও তদবীরের সমার্থক যা তাকদীরে মুয়াল্লাকের বিষয় এক্ষেত্রে দেখাযাচ্ছে ব্যক্তিই তার ভাগ্যের তথা তাকদীরে মুয়াল্লাকের নিয়ন্ত্রক থাকছেন অনিবার্য নিয়তী বা তাকদীরে মুবরাম যাহাই থাক আর সেজন্যই মানুষ সবসময় তার ভাগ্যকে সৌভাগ্যে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টাই করে যায়, ইহাই মানুষের ইতিহাস

১৫ ডিসে, ২০১১

জ্যোতিষবিদ্যা কি?

সনাতন ধর্মে জ্যোতিষকে বলা হয়েছে বেদের চক্ষু স্বরূপতাদের বহু আচার-অনুষ্ঠানের সাথে জ্যোতিষ সরাসরি জড়িতইসলাম ধর্মে তকদীর একটি অনিবার্য বিষয়, লাউহে মাহফুজে সংরক্ষিত অত্যন্ত গোপনীয় বিষয়যা একমাত্র আল্লাহ্ তায়ালাই জানেন, তার নিকটতম ফেরেশতারাও সে সম্পর্কে অজ্ঞকোন নবী-রাসুল(আঃ), এমনকি হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) পর্যন্ত তকদীরের গোপনীয়তা সম্পর্কে জানতেন নাকোন সৃষ্টির পক্ষেই সেই গোপনীয়তা সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়আর একথা অবিশ্বাস করলে, কিংবা তকদীরের গোপনীয়তা জানে বললে সে সঙ্গে সঙ্গে কাফের হয়ে যাবে শরীয়ত মতেহাদীস শরীফে তকদীর সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করাও নিষেধ আছেসার কথা হল, ইসলামে তকদীর, নসীব, ভাগ্য, নিয়তী, কপাল, ফেট, ফরচুন বলতে যা বুঝি- সে সম্পর্কে জানা, জানতে চাওয়া, জানি বলা, কাউকে জানানো ইত্যাদি সবই মহাপাপপ্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী হেফাজতের জন্য এসব থেকে দূরে থাকতে হবে, এবং এসব নিয়ে যারা ব্যবসা করে তাদেরকে প্রতিহত করাও ঈমানী দ্বায়ীত্ব

জ্যোতিষবিদ্যার আড়ালে ভন্ড-প্রতারকেরা ফায়দা লুটছেআসলে জ্যোতিষবিদ্যা- তকদীর, নসীব, ভাগ্য, নিয়তী, কপাল, ফেট, ফরচুন ইত্যাদি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞযারা জ্যোতিষবিদ্যা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন তারা একথা অবশ্যই স্বীকার করবেনআর যারা এ বিদ্যার গভীরে পৌঁছেননি, তারা তা বুঝেনওনিআর যারা এ বিদ্যা অধ্যয়ন করেননি তাদেরতো জানার কথাই নয়তারাতো প্রতারকদের জ্যোতিষ নামে ভাগ্য গণনার কথাই জেনে থাকবেনসাধারন লোকের এই অজ্ঞতাটুকুর সুযোগই প্রতারকরা নিচ্ছেআমি চেষ্টা করব পর্যায়ক্রমে জ্যোতিষবিদ্যার পরিচয় তুলে ধরতে

তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে- জ্যোতিষবিদ্যা কি? আমি তার জবাবে বলব- জ্যোতিষ কারো ভাগ্য গণনার বিদ্যা নয়, প্রতারকদের ভাগ্য গঠনের বিদ্যা হতে পারেজ্যোতিষ অনিবার্য কিছু জানেনা, শুধুই সম্ভাবনার কথা বলেচিকিৎসাবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞানআবহাওয়াবিজ্ঞান ইত্যাদির মত শুধুই সম্ভাবনার বিশ্লেষণ করতে পারেচিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানী, আবহাওয়াবিদ যেমন কিছু লক্ষণ, কিছু সূত্র, কিছু হিসাব বিশ্লেষণ করে সম্ভাবনার কথা বলেন; তেমনি জ্যোতিষবিদ্যাও কিছু লক্ষণ, কিছু সূত্র, কিছু হিসাব ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে সম্ভাবনার কথা বলেনকোন জ্যোতিষী যদি অনিবার্য কিছু বলেন, তবে তা তার নিজের কথা, জ্যোতিষবিদ্যার নয়আমার এই কথা যদি কোন জ্যোতিষী অস্বীকার করতে চান তবে অনুগ্রহকরে তিনি যেন আমার মেইলের মাধ্যমে কিংবা কোন ব্লগে পোস্টের মাধ্যমে জ্যোতিষবিদ্যার অনিবার্যতার প্রমান প্রদান করেন

কেউ কেউ হয়ত বলবেন, আমাকে জ্যোতিষী যা বলেছিল আমার জীবনে তা হুবহু ফলে গেছে বা মিলে গেছেহ্যাঁ হুবহু ফলে যাওয়ার অজস্র ঘটনা আছেফলে যায় বা মিলে যায় বলেইত এ বিদ্যা হাজার হাজার বছর ধরে টিকে আছেতারমধ্যে একটিও যদি না ফলে তাহলেইত তাকে অনিবার্য বলতে পারিনাযেজন্য চিকিৎসক বা আবহাওয়াবিদের কথাও অনিবার্য নয়আর যা অনিবার্য নয়, তা তকদীর বা ভাগ্য নয়কেননা ইসলামের বিশ্বাস অনুসারে সমগ্র সৃষ্টিজগতের তকদীর সৃষ্টিরও বহু পূর্বে "লাওহে মাহফুজ" নামক সংরক্ষিতস্থানে আল্লাহর হুকুমে সংরক্ষিত হয়েছে, যা সুনির্দিষ্ট এবং অনিবার্য! যখন শুধুমাত্র আরশ, কুরসি, লাওহে, কলম সৃষ্টি করেছেনআল্লাহ্ আরশে তার কুরসিতে আসীন হয়ে কলমকে হুকুম করেছেন লিখতে আর বিনা প্রশ্নে কলম লিখেছিল সমগ্র সৃষ্টিজগতের তকদীর

মানুষ, ফেরেশতা বা জ্বীন কারো পক্ষেই সেই লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত সুনির্দিষ্ট এবং অনিবার্য তকদীরলিপি পাঠ করা সম্ভব নয়আশাকরি এ ব্যাপারে কোন মুসলমানের দ্বিমত থাকার কথা নয়এখন তাহলে জিজ্ঞাসা করি, যেসব মুসলমান ভাগ্যগণনার কথা বলে তারা কি কুফরী করছেনা? সেইসব জ্যোতিষী নামধারীদের ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীস শরীফেও সতর্ক করা হয়েছে, কুফরী বলা হয়েছে, জাহান্নামে যাবে বলা হয়েছেকেননা এককালে জ্যোতিষী নামধারী বিধর্মী তান্ত্রিকগন শয়তানের সাধনা করতেনশয়তান তখন ফেরেশতালোক থেকে গোপনতথ্য সংগ্রহ করে দুনিয়ায় তার সাধকদের কাছে পৌঁছে দিতউল্লেখ্য যে, আল্লাহ্পাকের আরশ থেকে প্রথমে ফেরেশতালোকে আল্লাহর হুকুম প্রেরিত হয়। সে কারনেই সম্ভব হয়েছিল হযরত ইব্রাহীম(আঃ) ও হযরত মূসা(আঃ) এর মত নবীদের জন্মের পূর্বেই নমরূদ বা ফেরআউনের জ্যোতিষীদের আগাম ভবিষদ্বাণীকরা। যা পরবর্তীতে নমরূদ বা ফেরআউন শত চেষ্টা করেও প্রতিরোধ বা প্রতিহত করতে পারেনি। কেননা আল্লাহর ইচ্ছাতে কেউ বাদ সাধতে পারেনা। সেইসব জ্যোতিষীদের সম্পর্কেই কুফরী ও জাহান্নামের কথা বলা হয়েছে যারা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বিরুধিতাকারীদের সাহায্য করেআজকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চড়ম উৎকর্ষতার যুগেও সারাবিশ্বে তেমন একজন জ্যোতিষীকেও খুঁজে পাওয়া যাবেকি, যিনি কারো জন্মের পূর্বেই ভবিষদ্বাণী করতে পারেন- তিনি কবে, কোথায় জন্মিবেন এবং তার জীবনধারা কেমন হতে পারে? না, তেমন কেউ নেইথাকলে ইন্টারনেটের বদৌলতে অবশ্যই তাকে আমরা পেতামএ ব্যাপারে নিশ্চয়ই সবাই একমত হবেনপ্রশ্ন হতে পারে নেই কেন? নেই এ জন্য যে, হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) এর জন্মের পূর্বেই তার আগমন নিরাপদ করতে আল্লাহ্ তায়ালা শয়তানের ফেরেশতালোকের যাতায়াত রহিত করেছেন। আরও উল্লেখ্যযে, শয়তান ফেরেশতালোকে লালিত পালিত হওয়ায় লা’নত প্রাপ্তির পরও তথায় তার যাতায়াত ছিল।

তাহলে দেখাযাচ্ছে সেইসব জ্যোতিষী আর আজকের জ্যোতিষী নামে এক হলেও কার্যক্রম একনয়বিচারত করতে হবে কার্যক্রম দ্বারা, নাকি নাম দ্বারা? যদি কার্যক্রম দ্বারা বিচার করি তবে বলতে হবে আজকের জ্যোতিষীর বিশ্লেষণের ভিত্ত্বি হল কারো জন্ম তারিখ, সময় ও স্থানযা ব্যতীত জ্যোতিষবিদ্যা কিছুই বলতে পারেনাহস্তরেখাবিদ্যাতে হাতের রেখা, গঠন, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি, আর সংখ্যাতত্ত্বেও জন্ম তারিখ, নাম ইত্যাদিএসব কোন ভিত্ত্বি ব্যতীত কিছুই বলা সম্ভব নয়অথচ, সেইসব জ্যোতিষীগণ কোন ভিত্ত্বি এমনকি অস্তিত্বও ব্যতীত নির্ভূল ভবিষদ্বাণী করেছিলেন শয়তানের সাহায্যেইতিহাস তার স্বাক্ষী, আমার কথা নয়

যারা উপরোল্লেখিত বিষয়গুলি বুঝবেন, তারা অবশ্যই বুঝবেন যে প্রকৃত জ্যোতিষবিদ্যা কোন ভাগ্যগণনার বিষয় নয়, এতে অনিবার্য কিছু নেই, শুধুই সম্ভাবনার কথা বলে এবং তা কোন ভিত্ত্বিহীন বা অস্তিত্ত্বহীন বিষয় নয়প্রদত্ত তথ্যের ভিত্ত্বিতে প্রকৃত জ্যোতিষী কারো জীবনের সম্ভাবনার কথাই শুধু বলতে পারবেন, কোন অনিবার্য কথা বলতে পারবেননাকারন, জগতের কোন বিদ্যা, কোন শাষ্ত্র, কোন বিজ্ঞান, কোনকিছুতেই অনিবার্যতা নেইকোন চিকিৎসক তার রোগীর অনিবার্য পরিণতির কথা বলতে পারেননাযা বলেন তার ব্যতিক্রমও হতে দেখাযায়আবহাওয়াবিদ যা ঘোষনা দেন তারও ব্যতিক্রম হয়তাইবলে কোন চিকিৎসক বা আবহাওয়াবিদকে দায়ী করা যায়নাকারন, তারা যা দেখেছেন তাই বলেছেনতারা কোন ভুল বলেননিআর অনিবার্যভাবে তাদের ভবিষদ্বাণী ফলে যায়নি বলে কোন প্রশ্নের সম্মুখিনতো হনইনি, আর তাদের গ্রহনযোগ্যতাও হারাননিআধুনিক জ্যোতিষবিদ্যাও তদ্রুপ

পরিশেষে বলব, চিকিৎসা সেবা, আবহাওয়াবিদের সেবা কিংবা এ জাতীয় অন্যান্য সেবা গ্রহণ বা প্রদান যদি গুনাহের কাজ নাহয়, তবে জ্যোতিষ সেবা গ্রহন বা প্রদানে গুনাহের কাজ হওয়ার কোন যুক্তি আছেকি? সকলেইত মানবকল্যানে কাজ করছেকোন জ্যোতিষীর ব্যক্তিগত পাপ জ্যোতিষবিদ্যার উপর চাপানো যায়নাআশাকরি বিবেকবান মাত্রেই একথাটি বুঝবেনজ্যোতিষবিদ্যা কিভাবে মানবকল্যান করে এবং তকদীর সম্পর্কে ধর্ম কি বলে সেসব বিষয়গুলি পড়লে আরও স্পষ্ট হবে আশারাখি